শোন ভাই, আমি বুঝতে পারছি- মনে হয় আমি আর বাঁচবো না। যদি আমার কিছু একটা হয়ে যায়, মায়ের দিকে খেয়াল রাখবি। আর এই ঘটনার জন্য যে দায়ী, তার যেন বিচার হয়।’
ফেনীর সোনাগাজীতে আলিম পরীক্ষাকেন্দ্রে বোরকাপরিহিত দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ হয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সেই ছাত্রী এভাবেই কাতর স্বরে কথাগুলো বলছিল তার ভাইকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউর বাইরে কাঁদতে কাঁদতে গণমাধ্যমকে জানায় সেই ছাত্রীর ভাই।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে আইসিইউতে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিল সেই ছাত্রী। পরে দুপুর ১২টার দিকে সেই ছাত্রীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
ছাত্রীর ভাই বোনের সঙ্গে আলাপের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়ে বলেছেন , বোন তার কাছে এভাবে মিনতি করেছে- ‘ ভাই আমি বুঝতে পারছি- মনে হয় আমি আর বাঁচবো না। যদি আমার কিছু একটা হয়ে যায়, মায়ের দিকে খেয়াল রাখবি।
আর তোর প্রতি আমার নির্দেশ, আমার এই ঘটনার জন্য যে দায়ী, সেই মাদরাসার শিক্ষক যেন কোনোমতেই ছাড় না পায়। সঠিক বিচার যেন তার হয়, সে দিকে খেয়াল রাখবি।
যৌন হয়রানির অভিযোগে করা মামলার জেরে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার পক্ষের কয়েকজন গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হওয়ার ঠিক আগে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে সেই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তখন তার আর্তনাদ শুনে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ছাদে ছুটে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর জেলা সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেকে নিয়ে আসা হয়।
ঢামেকে ভর্তি এই ছাত্রীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চিকিৎসায় কাজ করছে ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড
আওয়ামী লীগের নেতা পুলিশসহ মাদ্রাসায় যান। তবে মাদরাসায় গিয়ে সব ছাত্র-ছাত্রীর মাধ্যমে পুরো ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ অধ্যক্ষকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এরপর ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পরের দিন সিরাজউদ্দৌলাকে আদালত পাঠানো হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।
আইএ