
মুজাহিদ হোসেন, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে ১০টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছে নির্বাচনসংক্রান্ত মতবিনিময় কমিটি। ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি-দাওয়া বিশ্লেষনে দেখা গেছে, তাদের পক্ষ থেকে মোট ৩৮টি দাবি জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। যার মধ্যে অধিকাংশ সংগঠন একাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে হলে ভোট কেন্দ্র চেয়েছে শুধু ছাত্রলীগ। এদিকে নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়ে সংগঠনগুলো বিভিন্ন ধরনের মত দিয়েছে।
এর বাইরে নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দলনিরপেক্ষ শিক্ষকদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ভোট কেন্দ্রগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসে কমিটি।
সেখানে রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সংগঠনগুলো আরও যেসব দাবি তোলে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত, সর্বদলীয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে পরিবেশ পরিষদ গঠন, ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কর্মকা-দের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সর্বদলীয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কার্যকরী নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোট কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনে প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রচার, নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন, ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধ বিচরণের সুযোগ, ফলাফল প্রকাশের সময় সাংবাদিকদের সংবাদ প্রচারে কোনো ধরনের বাধা প্রদান না করা, কার্যকরী ছাত্র সংসদ গঠন করতে রাকসু সভাপতি ও কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সর্বদলীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল গঠন করা এবং স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করার সুযোগ প্রদানসহ কোনো বিশেষ ছাত্র সংগঠনকে নির্বাচনে বিশেষ সুবিধা প্রদান না করা।
এদিকে ছাত্র ফেডারেশনের দাবি- রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত নয়, এমন শিক্ষকদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা এবং রাকসুর সভাপতি ছাত্রদের মধ্য থেকে নির্বাচিত করা। বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনকে তাদের স্বাধীন রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনকে নির্বাচনের বাইরে রাখার দাবি জানিয়েছে।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের দাবি- সব ছাত্র সংগঠনকে প্রচারসহ সব বিষয়ে সুবিধা প্রদান, তফসিল ঘোষণার পর কোনো প্রার্থী, নেতাকর্মী-সমর্থকদের হুমকি, হয়রানি ও গ্রেফতার না করার নিশ্চয়তা প্রদান। ছাত্র ইউনিয়নের দাবি- সান্ধ্য কোর্স শিক্ষার্থীদের ভোটার বা প্রার্থিতা না রাখা। আর ছাত্র ফ্রন্ট নেতারা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষায় নীতিমালা তৈরির দাবি জানান।
ছাত্রলীগের দাবি: ভোটার তালিকা হালনাগাদ, পিএইচডি, এমফিল ও সান্ধ্য কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রার্থিতা রাখা, হলেই ভোট কেন্দ্র রাখা, ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রতিক্রিয়াশীল বা মৌলবাদী সংগঠন বা গোষ্ঠী নির্বাচনে অংশ নিতে না পারা, এছাড়াও স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, আন্তর্জাতিক সম্পাদক, ক্যাফেটেরিয়া ও ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদসহ মোট ২৫টি পদ করার দাবি ছাত্রলীগের।
এ বিষয়ে রাকসু সংলাপ কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান বলেন, রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে তাদের দাবি নেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসা হবে, তাদেরও দাবি নেয়া হবে। পরবর্তীতে পর্যালোচনা শেষে দাবিগুলো বিবেচনা করা করা হবে।