নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশী এক যুবক খোলা চিঠি পঠিয়েছেন। ক্রাইস্টচার্চে হামলার ঘটনায় মুসলমানদের প্রতি যে সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা করেছেন তার প্রশংসা করেছেন তিনি। ওই যুবক প্রধানমন্ত্রীর তার সাথে দেখা করতে চান, তার দেশে জুম্মার নামাজ পড়তে চান বলেও জানিয়েছেন।
তিনি তার চিঠিতে লিখেছেনঃ
‘জেসিন্ডা আরডার্ন’ নিউজিল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী ম্যাডাম, পত্রের শুরুতেই আমার সালাম গ্রহণ করবেন, আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি পরম করুনাময় আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আপনি ভালো এবং সুস্থ থাকার জন্য আমি দূর থেকে দোয়া করি এবং আপনার সফলতা কামনা করছি। আমি ওমর ফারুক সজীব একজন বাংলাদেশী মুসলিম যুবক। গত ১৫ মার্চ শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেইসবুকে দেখতে পাই, ক্রাইস্টচার্চে এক নরপিশাচ, খুনি, সন্ত্রাসী আমার নিরপরাধ নিরিহ মুসলমান ভাই বোনদের হত্যা করে। এতে বাংলাদেশী পাঁচ জনসহ পঞ্চাশ জন মুসলিম নামাজরত অবস্থায় শহীদ হন। ভিডিওটা যখন আমি দেখছিলাম তখন আমার বুক ফেটে কান্না আসে। আমি চিৎকার করে আমার সৃষ্টিকর্তাকে ডাকি আর বলতে থাকি আল্লাহ রক্ষা করো আমার মুসলমান ভাই বোন দের। আমি বাংলাদেশে যখন জুম্মার নামাজে সেজদায় গেলাম কান্না থামিয়ে রাখতে পারলাম না। সারা বিশ্বের মুসলমানরা যখন আপনার নিউজিল্যান্ড এর দিকে তাকিয়ে, ঠিক তখনই আপনি মুসলমানদের প্রতি আপনার সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
মাননীয় ‘প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন’ আপনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হয়ে নিহত, আহত এবং সকল মুসলিমদের প্রতি যে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা দেখিয়েছেন। এতে আপনি প্রশংসার দাবিদার। আপনি এবং আপনার দেশের সকল নাগরিক এতটা মানবিক তা আমি কল্পনাও করিনি। নিউজিল্যান্ড এর মতো শান্তিপ্রিয় দেশের মসজিদে নিরাপদ জায়গায় যখন মুসলিম সম্প্রদায় হত্যার স্বীকার হয়, ঠিক তখনই আপনি নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত মুসলিমদের মায়ের ভূমিকায় অবতৃর্ন হলেন। তাই আমি বলতে চাই, আপনি নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়ের মা। আজ সারা বিশ্ব আপনাকে সালাম জানাচ্ছে। মুসলিমদের প্রতি আপনার যে সন্মান, সহানুভূতি, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা তাতে সারা বিশ্ব মুগ্ধ।
আমি একজন মুসলিম যুবক হিসেবে বিশ্বের সকল মুসলমান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। আপনি বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন একজন আদর্শ রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব কাকে বলে। শিখিয়েছেন মানবতার ধর্ম কাকে বলে, শান্তি কিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। আপনি বিশ্ব মানবতার এবং শান্তির উজ্জল দৃষ্টান্ত। আপনার এই মানবিক কার্যকলাপ শুধু মুসলিমরা নয় সারা বিশ্বের মানুষের মন জয় করেছে। আমি আশা করি আপনার মাধ্যমেই নিউজিল্যান্ড সহ সারা বিশ্বে শান্তি ফিরে আসবে। আপনি সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত মানবতার, ভালোবাসার, শান্তির দূত। আমার জীবনের এখন সবচেয়ে বড় ইচ্ছা, আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই, আপনার দেশে জুম্মার নামাজ পড়তে চাই। আপনাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হোক।
বর্তমান বিশ্বে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সকল গুনাবলি আপনার মধ্যে বিদ্যমান। অনন্তকাল বেচে থাকুন আপনি বিশ্ব মানবতার, ভালোবাসার, শান্তির দূত হয়ে।