এম ওমর ফারুক আজাদঃ
আকিদায়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের পথ থেকে সরে ইসলামের মনগড়া ব্যাখ্যা ও নবী-সাহাবিদের ব্যাপারে গোমরাহিমূলক বক্তব্য দিয়ে মাওলানা সা'দ ইয়াহুদীদের দালালি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক নায়েবে আমীর ও চট্টগ্রাম জামিয়া ইসলামিয়া বাবুনগরের প্রধান পরিচালক আল্লামা মুহিব্বুলাহ বাবুনগরী।
তাবলীগ জামাতের চলমান সংকট নিরসন ও উলামায়ে দেওবন্দের অবস্থান স্পষ্ট করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ২৭ মার্চ (বুধবার) নাজিরহাট কুম্ভারপাড়া ঈদগাহ ময়দানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মুহিব্বুলাহ বাবুনগরী আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী মকবুল এক জামাতের নাম তাবলীগ জামাত। এর মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ ইসলামের সন্ধান পেয়েছে। এটি এমন এক বিপ্লব যার জন্য যুদ্ধ কিংবা রক্তপাত করতে হয়নি। কিন্তু মাওলানা সা'দ শরিয়তের মনগড়া ব্যাখ্যা, ইসমতে আম্বিয়া ও সাহাবায়ে কেরামদের ইজ্জত নিয়ে গুস্তাকি করে মুসলমানদের মধ্যে ফেতনা ছড়িয়ে রক্তপাত ঘটাতে চেষ্টা করছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছিলো যার কারণে হজরত উসমান রাজিঃ কে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছিলো। মাওলানা সা'দও ইবনে সাবার মতো ইয়াহুদীদের দালালি করছে। তাই তার অনুসরণ করা গোমরাহি। আলেমদের অনুসরণ ও আকিদায়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের উসুলের উপর তাবলীগের কাজ পরিচালিত হবে।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, মাওলানা সা'দের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য স্পষ্ট করণে এ সমাবেশের আয়োজন । কারণ মাওলানা সা’দ তার বিভিন্ন বক্তব্যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’তের আক্বিদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী বিভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি নিজেকে বিশ্ব আমির দাবী করা, কোরআন হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, যেগুলোর মধ্যে দ্বীনের অপব্যাখ্যা, মনগড়া তাফসির, ভুল মাসআলা বর্ণনা, নবীগণের শানে বেয়াদবি পূর্ণ উক্তি, দ্বীনের অন্যান্য শাখাসমূহকে হেয়প্রতিপন্ন করা বা বাতিল সাব্যস্থ করার মতো গুরুতর বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সা’দ পন্থী কোন জামায়াতকে ফটিকছড়ির কোন মসজিদে স্থান দেয়া হবে না।
এছাড়া সমাবেশ থেকে ৫টি ঘোষণা প্রকাশ করা হয়।
১.মাওলানা সা'দ কে অনুকরণ ও অনুসরণ করা সম্পুর্ণ বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।
২.দেশি বিদেশী কোন এতায়াতী জামায়াত বা ব্যক্তিকে ফটিকছড়ি উপজেলায় কাজ করার সুযোগ দেয়া যাবেনা
৩. ফটিকছড়িতে মাওলানা ইলিয়াছ, মাওলানা ইউসুফ ও মাওলানা এনামুল হাসান (রহ.) এর বাতলানো পদ্ধতিতেই তাবলীগের কাজ চালাতে হবে। নতুন কোন পদ্ধতি চালু করা যাবেনা, ফটিকছড়ি মার্কাজে শুরার অনুমোদন ছাড়া অন্য কোন
৪.জামায়াতকে উপজেলার কোন মসজিদে স্থান দেয়া যাবেনা এবং কোন মহিলা জামায়াতকে কারো বাড়ি বা ঘরে স্থান দেয়া যাবেনা।
৫. ঢাকা কাকরাইল ও চট্টগ্রাম লাভলেইনের ওলামায়ে শুরার পরামর্শেক্রমে ফটিকছড়ি উপজেলায় তাবলীগের কাজ পরিচালিত হবে।
আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা মুহিউদ্দীন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী , মুফতি হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা বেলাল উদ্দীন নানুপুরী , মাওলানা আতিকুল্লাহ বাবুনগরী মাওলানা জুনায়েদ বিন জালাল, মাওলালা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন দৌলতপুরী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ নদভী, মাষ্টার শাহ আলম, মুফতি শওকত বিন হানিফ, মুফতি মামুন আজিজ, মাওলানা ইউসুফ প্রমুখ।
এছাড়াও সমাবেশে চট্টগ্রামের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, জামিয়া ইসলামিয়া বাবুনগরের প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি মাহমুদ হাসান এর লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে মুফতি মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি মাওলানা সা'দ এর সকল কার্যক্রম গবেষণা করে এই সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে সা'দ একজন ছদ্মবেশী ইয়াহুদীর এজেন্ট। তাই তার অনুসরণ করা হারাম।