
পাবলিক ভয়েস: ক্ষমতাসীন আ. লীগের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আমাদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষের যে মুক্ত চিন্তার অধিকার, লিখবার যে স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে এই আওয়ামী সরকার।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে র্যালি করলেও এতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে বেশী প্রাধান্য। র্যালি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যেমন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন। ঠিক তেমনি র্যালিতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের হাতে প্লেকার্ডের লেখাতেও বেগম জিয়ার মুক্তির চাওয়া হয়। একইভাবে র্যালি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান।

আজ বুধবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে র্যালি করেছে বিএনপি। বিকেল ৩ টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি শান্তিনগর হয়ে বিকেল ৪ টায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপির র্যালির ব্যানারে লেখা ছিল, ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি চাই। মহান স্বাধীনতা দিবসের বর্ণাঢ্য র্যালি।
এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে ট্রাকের ওপরে অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালি পূর্ব সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে প্রায় ৪৭ বছর হয়েছে স্বাধীনতা এসেছে। আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু এখনো কি আমরা স্বাধীন হয়েছি? আমরা এখনো স্বাধীন ও মুক্ত নই। একটা পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে। আজকে আমাদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের যে মুক্ত চিন্তা, কথা ও লেখার স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আ.লীগ তা হরণ করছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রী, যিনি তার সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। আজকে তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে চিকিৎসা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না।

আজকে আসুন, এই অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে দেশে যারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায় তাদের আমরা অপসারিত করি। সব দলমত নির্বিশেষ ঐক্যসৃষ্টি করি। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি। একই সাথে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করি। আজকে এই দিনে এই হোক আমাদের শপথ ও অঙ্গীকার।
বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতার র্যালিতে দলটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার নেতাকর্মীদেরকে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
র্যালিতে খালেদা জিয়া ও স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড, জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, ট্রাক ও ভ্যান গাড়ি নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। এরমধ্যে মহিলা দলের নেত্রীরা লাল-সবুজের শাড়ি এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাকর্মীরা টুপি এবং গেঞ্জি পুড়ে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
এসময় র্যালিতে থেকে মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই- খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, খালেদা জিয়ার ভয় নেই- রাজপথ ছাড়ি নাই, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম, স্বাধীনতার অপর নাম- জিয়াউর রহমান, স্বাধীনতার এই দিনে- জিয়া তোমার মনে পড়ে, লাল সবুজের পতাকায় জিয়া তোমার দেখা যায়সহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে বিএনপির র্যালিকে কেন্দ্র করে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকে সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করতে দেখা গেছে।
র্যালিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত আছেন।