
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামকে উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ওই সংবর্ধনায় তিনি স্থানীয় এক মুরুং তরুণীর সঙ্গে ‘অশালীন’ ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তবে সে ছবির মেয়েটিকে নিজের বোন বলে দাবি করে আবুল কালাম বলেছেন, আমাদের ভাই-বোনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে আমি তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবো।
ভাইরাল হয়ে ছবিটি নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
পলাশ রহমান নামে একজন ইতালী প্রবাসী কলামিস্ট লিখেছেন,
অশ্লীল ভাবে জড়িয়ে ধরা মেয়েটার ছবি প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা মানে ভিকটিমকে অসম্মান করা নয়। অন্তত তার চেহারা ঢেকে দেয়া দরকার ছিল। আমাদের আদালত তো উপযাচক হয়ে কতো কিছু করে, বলে। ওই অশ্লীল লোকটার জনপ্রতিনিধিত্ব কেড়ে নিয়ে তাকে আজীবনের জন্য সকল প্রকারের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করার একটা নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। নারী নির্যাতনের দন্ডবিধিতে তার শাস্তি দাবি করছি।
ওমর ফারুক আজাদ নামে একজন সংবাদিক লিখেছেন,
নারীটির চোখেমুখে ভয় আতঙ্ক আর লজ্জার ছাপ । না কইতে পারছেন না পারছেন সইতে। কারন তাকে জোরপুর্বক অশ্লীল ভঙ্গিতে জড়িয়ে ধরছে মনুষ্য চেহারার এক নরপশু। সে পশুটির নাম আবুল কালাম। তার প্রশাসনিক পরিচয় সে বান্দরবন জেলার আলী কদম উপজেলার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আর যে নারীটি এমন যৌন শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনি ক্ষুদ্র নৃ-গোস্টি ম্রো জাতির। বিজয় শুভেচ্ছা গ্রহণকালে জোরপুর্বক এভাবে বিভিন্ন ভঙ্গিতে তার ইচ্ছার বিরোদ্ধে অশ্লীল ভঙ্গিতে জড়িয়ে ধরে লম্পট আবুল কালাম। এই বদমায়েশকে জনপ্রতিনিধি না বলে যৌন প্রতিনিধি বলায়ই যুক্তিযুক্ত। লম্পট আবুল কালামের এই পাশবিক কর্মকান্ডে তার বিচার আর অপসারণ চাইবোনা। কারণ দেশটা এখন মগের মুল্লুক থেকে কয়েক ধাপ উন্নতি করেছে। যে দেশে একজন মাকে গণধর্ষণের আসামি জামিন পায় সে দেশে যৌন নিপিড়নের বিচার চাওয়া বোকামি। করণীয় একটাই। এসব লুচ্চা,বদমায়েশ ও লম্পটদের সামাজিকভাবে ঘৃণা করা। পারলে তার উপজেলার জনগণ গাছে গাছে জুতার মালা সম্বলিত ব্যানার, প্যাস্টুন লাগিয়ে অভিনব ঘৃণা ও প্রতিবাদের প্রকাশ ঘটাতে পারেন।
খালেদুর রহমান নামে একজন লিখেছেন,
কোথাও কোনো পরিত্রাণ নেই। পাড়ায় মহল্লায় অলিতে গলিতে রাজনৈতিক বেশ্যাদের বিচরণ আলোরা সবগুলি প্রস্থান করেছে পৃথিবী থেকে।একের পর এক বেশ্যাদের চরিত্র আমার ব্রেন ছিদ্র করে আঘাত হানে ডালিম নামক প্রানে।আজ সবুজ আছে তবু সবুজ নেই নীলাকাশ নেই অন্যায় অত্যাচার দেখতেদেখতে ইট ভাটায় পরিনত হয়েছে মগজ।যেখানে শুধু পুড়াগন্ধ মাঝেমাঝে খুব ইচ্ছেকরে জীবন থেকে অবসরে যাই কিন্তু সেটা পাপ বড়ই পাপ! এই রাজনৈতিক বেশ্যা আবুল কালাম সাহেব( নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান)বান্দরবন জেলার আলিকদম উপজেলা একজন জনপ্রতিনিধি কখনো এইভাবে একজন নারীকে জড়িয়ে ধরতে পারেননা ওই নারীর অনুমতি ছাড়া। কান্ড জ্ঞানহীন ও লুচ্চামি ব্যাক্তি ছাড়া কখনো একজন নারীকে এইভাবে জড়িয়ে ধরতে পারেনা। এটি সম্পৃর্ণ শ্লীলতাহানি ও নারী সমাজকে অবমূল্যায়ন করা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটা ভাইরাল হয়ে আছে। অসংখ্য মানুষ তাদের আইডি থেকে বিষয়টা নিয়ে প্রতিবাদ করছেন।
তবে এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে আলিকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম বলেন,
‘কুরুক পাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ আমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। যে মেয়ের সঙ্গে ছবি তুলেছি, তার পরিবারের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই আমার পারিবারিক সম্পর্ক। মেয়েটিকে আমি ছোটবোনের মতো দেখি। এখানে জোর করে ছবি তোলা হয়নি। আজও বোনের মতোই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে ছবি তুলেছি। এ ছবি তোলার সময় পাশেই তার মা, বাবা ও বড় ভাই ছাড়াও পাড়ার শত শত লোকজন ছিল। আমি যে ছবি তুলেছি তা নিয়ে তার পরিবারের বা পাড়ার কারও কোনও ধরনের আপত্তি ছিল না। তাছাড়া আমি এ উপজেলায় দীর্ঘ কয়েক বছর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলাম, এখনও আছি। এ উপজেলার সব মানুষ আমাকে চেনে। আমার এ বোনটি নির্বাচনের সময় আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে, কেঁদেছেও। আর আমি তাকে এভাবে শত শত মানুষের সামনে সান্ত্বনা দিয়েছি। আমাদের ভাই-বোনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে আমি তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবো।
তবে এ বিষয়ে মেয়েটির বা তার পরিবারের এখনও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।