পাকিস্তানের গুলজার খান ওয়াজির এবং মস্তান খান ওয়াজির। আপন সহদর দুই ভাই তারা। দুজনের ঘরেই মোট ৬০ জন সন্তান রয়েছে। গুলজার খানের ৩৭ সন্তান এবং মস্তান খানের ২৩ জন সন্তান রয়েছে। দুজনের ঘরেই তিনজন করে স্ত্রী। তবে এতেই সন্তুষ্ট নন তারা। তাদের আরও সন্তান চাই। দুজনেই ১০০ সন্তানের কোটা পার করতে চান। অন্তত “শত সন্তানের জনক” খেতাব তারা নিতে চান। ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক “ভালো মেয়ে পেলে” আরও একটি করে বিয়ে করবেন তারা-এমন সিদ্ধান্তও নিয়ে রেখেছেন।
৫৭ বছরের গুলজার ও ৪৯ বছরের মস্তান খান পাকিস্তানের বান্নু শহরের বাসিন্দা। সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের সরল যুক্তি “আল্লাহ দিচ্ছেন তাই হচ্ছে”।
গুলজার বলেন, “আল্লাহ গোটা দুনিয়া মানুষের জন্য বানিয়েছেন। কেন আমি বাচ্চা হওয়ার এই প্রক্রিয়া থামাব? ইসলামের পরিবার পরিকল্পনা করতে নিষেধ করেছে। আমরা শক্তিশালী হতে চাই।” সবাইকে একত্র করতে না পারলেও ২৩টি বাচ্চাকে পাশে বসিয়ে তার রসিক মন্তব্য, “ওদের ক্রিকেট খেলার জন্য বন্ধুদের দরকার পড়বে না।”
[caption id="attachment_18212" align="alignnone" width="300"]
সন্তানদের নিয়ে গুলজার খান : ছবি, দ্য ডন[/caption]
মস্তান খান ওয়াজিরের কথায়, আমার ২৩ সন্তান ছাড়াও নাতিনাতনির সংখ্যা অনেক। সেটা বলতে পারব না। তার কথায়, আল্লাহ তো বলেছেন তিনিই সব কিছু দেবেন। তাঁকে বিশ্বাস করি আমি। কেবল তারা দুই ভাই-ই নন বেলুচিস্তানের জান মোহাম্মদের ছেলেমেয়ের সংখ্যা ৩৮।
পাকিস্তানে বহুবিবাহ আইনসিদ্ধ। তবে তেমন ঘটনা কম বলেই দাবি পাক প্রশাসনের। খান পরিবারে বহুবিবাহের প্রচলন নেই। ১৯৯৮ সালে শেষ জনগণনায় পাকিস্তানে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে তেরো কোটি। পরের গণশুমারিতে সেটা ২০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
একদল বিশেষজ্ঞ পাকিস্তানের এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টাকে নেতিবাচকভাবেও নিচ্ছে। তারা বলছে, পাকিস্তানে জনসংখ্যার হার সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানের অর্থনীতি কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এ কারণে। এই অবস্থায় জনসংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিচ্ছে কোন কোন বিশেষজ্ঞরা। তবে এসব অনেকেই মানতে রাজি নন। তারা জানাচ্ছেন, আল্লাহ্ই ব্যবস্থা করবেন।
দক্ষিণ এশিয়ার শিশু জন্মের হারে শীর্ষে পাকিস্তান। প্রতি মহিলা তিন সন্তান জন্ম দেন সেদেশে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও সরকারের প্রাথমিক তথ্য থেকে অনুমান এই জন্মের হার অপরিবর্তিত রয়েছে।