ইবনে মুসা
বিশিষ্ট ওয়ায়েজ নবমুসলিম মাওলানা শামসুল হক যশোরীকে তাবলীগের বিতর্কিত ব্যক্তি মাওলানা সা’দ —এর অনুসারী তথা এতাআতী কর্তৃক জিম্মি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজিামুদ্দীন মারকায নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মার্চ বিকাল ৩ টা ৫৫ মিনিটে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়— নবমুসলিম মাওলানা শামসুল হক যশোরী ভীত অবস্থায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। পাশ থেকে ধমকের সুরে এবং উগ্রমেজাজে মাওলানা যশোরী থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নিতে দেখা যায় কয়েকজনকে। তবে ভিডিওতে তাদের শুধু কথা শোনা গেছে, ছবি দেখা যায়নি। মাওলানা সা’দের কোনো ভুল নেই বলেও মাওলানা যশোরী থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করে জিম্মিকারী সন্ত্রাসীরা।
নবমুসলিম শামসুল হক যশোরী এর আগে কোনো একটি মাহফিলে বক্তব্যে বলেছেন; মাওলানা সা’দ ইসলামবিরোধীদের এজেন্ট হয়ে কাজ করছে (কথাটা শুধুমাত্র মাওলানা যশোরী নয়, বাংলাদেশের অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামই বলে থাকেন)। তার জের ধরেই তাকে জিম্মি করে উগ্র এতাআতীগোষ্ঠী। তারা মাওলানা যশোরী থেকে আরও স্বীকারোক্তি নেন— তিনি আগে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা ভুল ছিল এবং ভবিষ্যতে এতাআতীদের বিরুদ্ধে কোনোধরণের বক্তব্য দেবেন না।
ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়— পাশ থেকে কেউ একজন প্রশ্নকারীকে বলে দিচ্ছে; মুফতী ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে মাওলানা সা’দের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন— এবং তিনি ইস্তেখারার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, মাওলানা সা’দ ঠিক আছেন, তার মাঝে কোনো ভুল নেই— এ ব্যাপারে মাওলানা যশোরী জানেন কী না; উত্তরে তিনি জানেন না বলে জানান।
মাওলানা সা’দই তাবলীগের বিশ্ব আমীর বলেও যশোরী থেকে স্বীকারোক্তি নেন জিম্মিকারীরা।
ভিডিওটিতে স্পষ্ট দেখা যায়— মাওলানা যশোরী থেকে জোর করে এবং ভয়-ভীতি দেখিয়েই স্বীকারোক্তি নেওয়া হচ্ছে।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে পাবলিক ভয়েসের পক্ষ থেকে মাওলানা যশোরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন—
সেটা ছিল একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। নিজের ইচ্ছায় কোনো কিছুই বলার মতো পরিবেশ ছিল না আমার। ওদের মেজাজ ও অবস্থা দেখে মনে হয়েছে— ওদের মনমতো কথা না বললে আমাকে মেরেই ফেলবে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাইলে তিনি বলেন— ৩ মার্চ তার মাহফিল ছিল দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার শালবাড়ি গ্রামে। সেখানে রাত্রি যাপন করে ৪ মার্চ নওগাঁর মাহফিল ধরবেন বলে ফজরের নামাযের পর দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার রেলস্টেশনে যান তিনি। বগুড়ার সান্তাহার যাওয়ার উদ্দেশ্যে টিকিটের লাইনে দাঁড়ালে— কেউ একজন এসে তাকে বলেন; মসজিদে আলেমদের একটি জামাত এসেছে, আপনি এখানে এসেছেন খবর পেয়ে সবার চাহিদা আপনি আমাদের মাঝে কিছু কথা বলে যাবেন। মাওলানা যশোরী ইসলামের স্বার্থে মসজিদে গেলে— জিম্মিকারীরা তাকে সেখান থেকে ফুলবাড়ি তাবলীগের মারকাজ মসজিদে নিয়ে যান। একটি রুমে আটকে রেখে ভয়__ভীতি দেখিয়ে তার থেকে এ সমস্ত কথা আদায় করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, তাদের কথামতো স্বীকারোক্তি না দিলে তাদের ভাবমূর্তি এমন ছিল— হয়তো তারা আমাকে মেরেই ফেলত। ঘন্টাখানিক আটক রেখে, তাকে দিয়ে মিথ্যা ভিডিও বানিয়ে ছেড়ে দেয়। জিম্মিকারীদের কাউকেই চিনতে পারেননি তিনি। তবে সবাই মাওলানা সা'দের অনুসারী।