পাবলিক ভয়েস: ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
গণমাধ্যম কর্মীরা ভোট কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের লাইভ সম্প্রচারসহ ভোট কার্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধিতে এসেছে এমন নির্দেশনা।
গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০১৯-এর আচরণ বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। এতে ১৫টি ধারা রয়েছে। আচরণবিধিতে বলা হয়, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
কোনো প্রার্থী কর্তৃক রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো ছাত্র সংগঠনের কেউ কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না।
ভোট কেন্দ্রে প্রবেশাধিকারের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়, ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করবেন। নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট, রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করবেন। চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যম কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ছবি তুলতে পারবেন।
তবে ভোট কেন্দ্রের বুথে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোট কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের লাইভ সম্প্রচারসহ ভোটকার্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না। নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া ক্যাম্পাসে অন্য সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহারের বিষয়ে বলা হয়, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনোরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না।
তবে নির্বাচনের দিন প্রার্থী/ভোটার/শিক্ষার্থীরা ভোট কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন। প্রচার-প্রচারণার বিধিমালায় বলা হয়, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করতে পারবেন।
প্রতিদিন প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। আচরণবিধিতে বলা হয়, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক চিফ রিটার্নিং অফিসার, সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে।
এরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে অন্তত ২৪ ঘণ্টা পূর্বে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।
বিধিমালায় আরও বলা হয়, পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো স্থানে (যেমন-শ্রেণীকক্ষ, পাঠকক্ষ, পরীক্ষার হল ইত্যাদি) সভা/সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। শ্রেণীকক্ষের ভেতরে ও করিডোরে মিছিল করা যাবে না।নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী নিজের সাদা-কালো ছবি ব্যতীত লিফলেট বা হ্যান্ডবিলে অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ছাপানো ও বিলি করা যাবে।
কোনো প্রকার স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন, বেড়া, গাছ-পালা, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। নির্বাচনী বিধিমালায় আরও বলা হয়, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ছাত্র সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গেট, তোরণ, ঘের নির্মাণ, প্যান্ডেল, ক্যাম্প, শামিয়ানা, মঞ্চ স্থাপন ও আলোকসজ্জা করতে পারবেন না। ভোটারদের কোনোরূপ উপঢৌকন বা বকশিশ ইত্যাদি প্রদান করা যাবে না।
নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোনো প্রার্থীর ছবি বা তার পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা অন্য কারও ছবি বা প্রতীকের চিহ্ন সংবলিত শার্ট, টি-শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া বা কোনো ধরনের পোশাক ব্যবহার করা যাবে না। আচরণবিধির সর্বশেষ ধারায় বলা হয়, নির্বাচনের এ বিধিমালা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।