চবি প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি) পৃথক আটটি ঘটনায় মোট ১৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও দুজনের সনদ বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্যে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, ২ জনের সনদ স্থগিত ও একজনকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন চবি প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, ভর্তি জালিয়াতি, শিক্ষার্থী লাঞ্ছনা, ছিনতাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সের অপব্যবহার, স্টাফদের হুমকি ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পৃথক পৃথক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ এন্ড ডিসিপ্লিন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
শিবু দাস গুপ্ত নামের একজনের প্রক্সি দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ ফাহিম জাফরীকে ১ বছর বহিস্কার, প্রক্সির অভিযোগে আইন অনুষদের (২০১৪-১৫) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন সিকদারকে ১ বছরের বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাস্বুলেন্সের অপব্যাবহার ও স্টাপ হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের(২০১৩-১৪) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এইচ এম হাসানুজ্জামানকে ১ বছরের বহিষ্কার করা হয়েছে।
হলের দুই ছাত্রের মোবাইল ও টাকা চুরির ঘটনায় রসায়ন বিভাগের (২০১২-১৩)শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান ফকিরকে ১ বছরের বহিষ্কার করা হয়েছে।
সম্প্রতি দুইটি ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষের ঘটনায় পরিসংখ্যান বিভাগের (২০১৭-১৮) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমরান নাছির ইমন এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের(২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জিয়াউল হক মজুমদারকে ৬ মাসের বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ.এফ রহমান হলে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় লোকপ্রশাসন বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দীপায়ন দেব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের সাব্বিরুল ইসলাম, একই বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের অর্ণব বড়ুয়া এবং আরবী বিভাগের (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ- এই চারজনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইতিহাস বিভাগের (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের মোঃ সাব্বির হোসেনকে ১ বছর এবং অর্থনীতি বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের মামুনুর রশীদকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া প্রক্সির দায়ে আরও দুই শিক্ষার্থীর সনদ স্থগিত করা হয়েছে। তারা হলেন- বাংলা বিভাগের (২০১১-১২) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ জামশেদুল করিম এবং ইতিহাস বিভাগের (২০১৩-১৪) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন। তাদের ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় বহিস্কারের বদলে সনদ স্থগিত করা হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হওয়া (২০১৭-১৮) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মাঈন নেওয়াজকে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়ায় স্থায়ীভাবে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, বহিস্কৃত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চলাচল আইনগতভাবে অবৈধ। যদি কোন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বা হলে অবস্থান করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।