বরিশালের চরমোনাই জামেয়া রশিদিয়া আহসানাবাদ মদরাসার বার্ষিক দ্বিতীয় পর্বের মাহফিলের (ফাল্গুনের মাহফিল নামে পরিচিত) সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আর দুদিন বাদে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির তত্বাবধানে পরিচালিত বৃহত এই মাহফিলের কার্যক্রম। তিনদিনব্যাপী এই মাহফিল ২০ ফেব্রুয়ারি বুধবার শুরু হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।

বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো. মোখতার হোসাইন পাবলিক ভয়েসের কাছে মাহফিলের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বলেন,

“মাহফিলের প্রস্ততি অনেকাংশেই সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তারিখ থেকে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে”। এদিন বাদ জোহর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির প্রধান (আমিরুল মুজাহিদীন) মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই”। ২০ তারিখ থেকে তিনদিন ধারাবাহিক মাহফিলের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

তিনি আরো বলেন, বুধবার ২০ তারিখ থেকে মাহফিল শুরু হলেও আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকেই মাঠ লোকজনে পূর্ণ হতে শুরু করছে। প্রথম দুই মাঠে আরো দুদিন আগেই মানুষজন এসে যায়গা নিয়ে বসেছেন। মোট পাঁচটি মাঠে প্রায় ১৩০ একর জায়গা জুড়ে মাহফিলে আগত মুসুল্লিদের জন্য সামিয়ানা টানানো হয়েছে। চরমোনাই মাঠে উপস্থিত থাকা পাবলিক ভয়েসের প্রতিনিধিও এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পাঁচটি মাঠেরই সামিয়ানা টানানোসহ সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। লোকজনও আসছে এখানে। ইতোমধ্যেই প্রথম দুই মাঠে কোথাও কোন যায়গা খালি নেই।

মাহফিলের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলাপ করলে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মোক্তার হোসাইন বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী বিশেষ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে সাথে সাথে প্রশাসনিক নিরাপত্তার জন্য বরিশাল মহানগর পুলিশ এবং বরিশালের র‍্যাবের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের সাথে আলাপ করা হয়েছে এবং তারা “চরমোনাই মাহফিলে সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ক কার্যক্রম নিয়ে একটি বৈঠক করছেন”। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান তিনি।

মাহফিলে বিদেশ থেকে কোন মেহমান আসবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চরমোনাই মাহফিলের প্রতি বছরই তো বিদেশ থেকে বহু মেহমানদের উপস্থিতি থাকে। এবছর ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের উস্তাদদের মধ্য থেকে থেকে প্রায় ৬ জনের একটি প্রতিনিধি দল মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন এছাড়াও ওমান, মিশর, বাহরাইন, কাতার থেকেও অনেক মেহমানরা উপস্থিত হবেন। বিদেশি মেহমানদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের জোরদার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও তিনি নিরাপত্তা ও সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ঘোষিত মাহফিলের সার্বিক নির্দেশনাটি অনুসরন করতে বলেছেন।

নির্দেশনাটি এখানে পাবেন

মাহফিলের প্রস্তুতি নিয়ে আরো আলাপ করা হয় চরমোনাই মাহফিল পরিচালনায় সবচেয়ে চৌকসবাহিনী হিসেবে পরিচিত লাইট, মাইক, টেলিফোন বিভাগের (LMT) সহ. পরিচালক মাও. ফখরুল ইসলামের সাথে, তিনি জানান মাহফিলে লাইট, বিদ্যুত, মাইক এবং প্রায় ১৩০ একর যায়গা জুড়ে টেলিফোনের সংযোগ টানাসহ এলএমটির সার্বিক সকল কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যেই এলএমটির সকল কাজ সম্পন্ন হবে।

এলএমটির টেলিফোন বিভাগের সহ. পরিচালক মুহা. হাসিবুর রহমানের সাথে মাহফিলের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাদের কার্যক্রম ও প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্নই বলা যায়। পার্সেন্টিজ হারে বললে “৯৫% কাজ আমাদের কমপ্লিট” হয়েছে, আজকের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। এরপর কেবল আনুষ্ঠানিকতার বাকি থাকবে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০ ফেব্রুয়ারি বুধবার মাহফিলের উদ্বোধন হবে।

প্রসঙ্গত : চরমোনাই বাৎসরিক ফাল্গুনের মাহফিলের পরিচিতি এখন বিশ্বজুড়ে। বিশাল আয়োজনে, বড় আয়তনে প্রায় পাঁচটি মাঠ নিয়ে এ বছর মাহফিল আয়োজিত হচ্ছে।