হাছিব আর রহমান
১৪ ই ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া আলেমদের তত্ত্বাবধানে ৫৩ তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন শেষ হলো। সরকারি হিসেব মতে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলেও আলেমদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে বিশ্ব ইজতেমা ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে।
ইজতেমার প্রথম দিনে মাঠে উপস্থিত হওয়া কয়েকজনের মন্তব্য নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিবেদন।
জানা যাক ইজতেমার মাঠে উপস্থিত হওয়া দুর দুরন্তের সাধারণরা কে কি মন্তব্য করছেন বিশ্ব ইজতেমা বিষয়ে।
মালয়েশিয়া থেকে আগত বিদেশী একজন মেহমান বলছেন, 'শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ আমরা বিশ্ব ইজতেমায় উপস্থিত হয়েছি। বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি এবং দাওয়াত ও তাবলীগের এই কাজ বিশ্বব্যাপী আরো ছড়িয়ে পড়ার দোয়া করি।'
ভোলা থেকে আগত মাও. সাঈদ আহমদের সাথে কথা বললে তিনি বলেছেন,
সকালে মাঠে এসে উপস্থিত হয়েছি। মাঠের অবস্থা দেখে আনন্দিত না হয়ে পারিনি। একটি ভয় কাজ করতেছিলো_ “মানুষ উপস্থিত হবে কি না” কিন্তু এখানে এসে লোকজনের উপস্থিতি দেখে অনেক ভালো লেগেছে।
কুড়িগ্রাম থেকে আগত সিরাজুল ইসলাম বলছেন, আমরা জামাতবন্দী হয়ে কুড়িগ্রাম থেকে এসেছি। নিজেদের খিত্তা খুজে বের করে নিয়মতান্ত্রিক আমলে জুড়েছি। মাঠে এত মানুষের উপস্থিতি কল্পনাতেও ছিল না কিন্তু কানায় কানায় মাঠ পূর্ণ। ইনশাল্লাহ আমি ইজতেমার পরে তিন চিল্লার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার নিয়ত করেছি। বিশ্ব ইজতেমায় কেন এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এবারের বিশ্ব ইজতেমা প্রথম তিন দিন আলেমদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে তাই আলেমদের কাছে দাওয়াতের কাজ এবং ইসলামের পথে চলার দীক্ষা নিতে এসেছি।
বোরহান উদ্দিন নামে একজন বলেছেন, টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা এই বার সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বাদ আসর বিদেশী এক মেহমানের আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে হয়েছে আজ, ছোট বেলা থেকে বিশ্ব ইজতামায় আসতেছি কিন্তু এ বছরের ইজতেমায় মানুষের যে জনসমুদ্র দেখতেছি, এত মানুষের মিলন মেলা আগের আর কোন ইজতেমায় আমি দেখিনি। তিনি আরো বলেন, আমরা আগের দিন বুধবার রাত ১:৫০ টায় আমরা মাঠে প্রবেশের আগে ভেবেছিলাম মাঠে অনায়াসে জায়গা পেয়ে যাব কিন্তু মাঠে প্রবেশের পর দেখি আমাদের জন্য নির্ধারিত সিলেটি ৪৩ নাম্বার এর ক খিত্তা পুরাই কানায় কানায় পরিপূর্ণ, অবশেষে মৌলভীবাজারের জায়গায় অল্প একটু জায়গা নিয়ে আমরা সবাই কোনমতে এখন মাঠে অবস্থান করছি। তবে তিনি সা'দপন্থীদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে বলেছেন, সাদ পন্থীরা বিশ্ব ইজতেমাকে কলুষিত করেছে এবং ইজতেমা মাঠে মাদ্রাসা ছাত্র এবং আলেমদের রক্ত রক্ত ঝরিয়েছে আমরা তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করি।
আরিফুল ইসলাম নামে একজন বলেছেন,
অতীতের ৫৩ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা ৷ তিনি বলেন আমি মাঠ ঘুরে দেখেছি, মাঠে জায়গা খালি দূরের কথা! আশেপাশে কোন এলাকাতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৪ তারিখের আগেই টঙ্গীর তুরাগ তীরের ১৬০ একর জায়গার বিশ্ব ইজতেমার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে। ১৪ তারিখ রাতেও দেখা গেছে অনেক মুসল্লিরা মাঠে আসছেন এবং মাঠে জায়গা না পেয়ে মাঠের বাইরে তাবু গেড়ে স্থান নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন
ইজতেমায় আসছেন তাবলীগের বেশিরভাগ মুরুব্বীরা
একই মাসে বিশ্ব ইজতেমা ও চরমোনাই মাহফিল, অংশ নিন দুটোতেই
সারা দেশ থেকে বিশ্ব ইজতেমায় ছুটছেন আলেম ওলামারা
সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনার আহবান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
ইজতেমা মাঠে পৌঁছেছেন মাও. আহমদ লাট : আছরের পর থেকে বয়ান শুরু
প্রসঙ্গত : আলমি শুরা মেরে তাবলীগ পরিচালনা করতে চাওয়া অংশের প্রথম তিন দিনের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ১৬ তারিখে হবে এরপর ১৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই দিন সাদপন্থী তাবলীগীরা বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনা করবেন।