আফসার আহমদ জুবাইর
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্বব্যাপী শুরু হয় যুদ্ধ- সংঘাতের ভয়াবহতা। এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধের ফলে সারা দুনিয়ায়জুড়ে শুরু হয় অশান্তির দাবানল। পারমাণবিক অস্ত্র বানানো নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছিলো প্রতিযোগিতা। খুন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে, বিশ্বজুড়ে শান্তির সুবাতাস প্রতিষ্ঠা করতে, United National organisation (UNO) জাতিসংঘ নামক আন্তর্জাতিক সংস্থা ১৯৪৫ সনে প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘের লক্ষ ও উদ্দেশ্য হলো, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা,ও জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া। জাতি-ধর্ম-ভাষা দলমত নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তা ও শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করা। কিন্তু জাতিসংঘ কি চায়,আমরা একটু আলোকপাত করি। এককধারী ক্ষমতাশালীরা আজ জাতিসংঘকে পাঁঠাবলি বানালো। ক্ষমতার চাবি এককভাবে তারা কেঁড়ে নিলো। জনগণকে নিরাপত্তার বদলায় যু্দ্ধ নামক অশান্তি ছাপাইয়া দিল।
আরও পড়ুন- কাদিয়ানিদের ব্যাপারে সামাধানে আসুন
শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্রগুলোকে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে অশান্তি করে ছাড়ল। জাতিসংঘ একযোগে ইসলামকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে মোক্ষম হাতিয়ার হিসাবে উপনীত হলো। ইসলামের প্রধান প্রধান ফরজ বিধানগুলোকে ওরা কলমের খোঁচায় তুলে ফেলল। জাতিসংঘের ইতিহাসে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। জাতিসংঘের ইতিহাসে মুসলিমদের পক্ষে শুধু ব্যর্থতার ইতিহাস রচনা করল। জাতিসংঘ এখনো কাশ্মীর ব্যাপারে খুব চুপ। দখলদার ভারত বারবার কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। অথচ ওরা দেখেও না দেখার ভাণ ধরছে। মিথ্যা অজুহাতে প্রমাণ ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিদের উপর হিংস্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করল। শতশত হাফেজে কুরানকে শহিদ করল। জাতিসংঘ ওরা আফগানিদের মারতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে দিল। যার ফলশ্রুতি লাখলাখ আফগানিদের জিবন কেঁড়ে নিলো। মা-বোনদের ইজ্জত কেঁড়ে নিলো। তাদের পেটে জারজ সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করল। সন্দেহজনক বন্দিদের দুনিয়ার নরক খ্যাত আবু গারিব, ও গুয়ান্তানামো কারাগারে অমানবিক অত্যাচারের ষ্টীমরোলার চালায়। অথচ আজো আফগানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারেনি এই জাতিসঙ্ঘাত। ইরাক,কুয়েতের সংঘাতে মার্কিনীদের হস্তক্ষেপ ওরা নিরবতা পালন করা ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারেনি। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে হত্যা বন্ধ সমাধান না খুঁজে, মার্কিন-রাশিয়া একযোগে গণহারে মুসলিম নিধনে নামল! জেনো কেউ বিরোধীদল, আর কেউ সরকারীদল! এভাবেই মারছে।
অথচ ওরা নিন্দা ছাড়া কিছুই জানাতে পারেনি! দখলদার ইজ্রাইল আজ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অশান্তির বীজবোপণ করছে। জাতিসংঘের সমর্থনে গাজাভুখণ্ডকে নরক বানাই ছাড়ছে। অথচ ওরা হাতে তালি দিচ্ছে। প্রত্যেকদিন কোনোকোনো যুবক ইহুদিসেনাদের গুলিতে লাশ হয়ে ঘরে ফিরছে। অবুঝ শিশুর গায়ের উপর অবৈধ ইহুদিরাষ্ট্রির সেনারা ট্যাং চালিয়ে দিচ্ছে। মেয়েদের ধরে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করছে।
অথচ বিশ্ববিবেক নিরব! জাতিসংঘ নিরব!! মিয়ানমারে বৌদ্ধরা রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে জবেহ করে পানীতে ভাসিয়ে দিলো। তাদের মাংসকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাইলো। লাখোলাখো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলো! ওরা নিন্দা ছাড়া কিছুই করতে পারিনি। আর কোনো সমাধানও দিতে পারেনি। আমরা দেখতে পাচ্ছি ইহুদি খ্রিস্ট শক্তির স্বার্থরক্ষাই হচ্ছে জাতিসংঘের মৌলিক নীতি। কৌশলে তারা মুসলিম নিধনে ব্যস্ত। তারা মুসলিমদের সাহায্যার্থে কখনো এগিয়ে আসেনি।
তাই মুসলিম বিশ্বের অধঃপতন ডেকে আনার আগে মূল শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারীকে যদি চিহ্নিত না করে। প্রতিরোধ না গড়ে, মুসলিম বিশ্ব সব হারাবে। মুসলিম বিশ্বের করণীয়। OIC ও আরবলীগ নামক গোলামদের সঙ্গ ত্যাগ করে , নতুন জোট গঠন করে মুসলিম শাসক ও সেনাদের তাদের নির্যাতিত ভাইদের পাশে দাঁড়াতে হবে। যেখানে একজন মুসলিম নির্যাতিত হবে,সেখানেই কড়া জবাব দেওয়া হবে। তারা আর কোনো মুসলিমদের রক্তচোষার সাহস পাবেনা ইনশাআল্লাহ।
লেখক-
কবি নজরুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়।