পাবলিক ভয়েস: জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৪১ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আ.লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নামের তালিকা ঘোষণা করেন।
সংসদে প্রাপ্ত আসনের আনুপাতিক হিসেবে আ.লীগের প্রাপ্য আসন সংখ্যা ৪৩ হলেও ঘোষণা করা হয়েছে ৪১টি। বাকি ২টি আসন আজ আজ শনিবার ঘোষণা করা হতে পারে। এ ২টি আসনে ১৪ দলের শরিক কোন দল থেকে দেয়া হতে পারে বলে আ.লীগ সূত্রে জানা গেছে।
৪১টি আসনে আ,লীগের মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- কুমিল্লা থেকে আনজুম সুলতানা, বরগুনা থেকে সুলতানা নাদিরা, জামালপুর থেকে মিসেস হোসনে আরা, গাজীপুর থেকে রুমানা আলি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, নেত্রকোনার হাবিবা রহমান খান শেফালী, পিরোজপুরের শেখ এ্যানি রহমান, টাঙ্গাইলের অপরাজিতা হক, সুনামগঞ্জের শামীমা আক্তার খানম, গাজীপুরের শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, মুন্সীগঞ্জের ফজিলাতুন নেসা, নীলফামারীর রাবেয়া আলীম, নরসিংদীর তামান্না নুসরাত বুবলী, গোপালগঞ্জের নার্গিস রহমান, ময়মনসিংহের মনিরা সুলতানা, ঢাকার নাহিদ ইজহার খান, ঝিনাইদহের খালেদা খানম, বরিশালের সৈয়দা রুবিনা মিরা, চট্টগ্রামের ওয়াসিকা আয়শা খান, পটুয়াখালীর কাজী কানিজ সুলতানা, খুলনার অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার, ঢাকার সুবর্ণা মোস্তাফা, দিনাজপুর থেকে জাকিয়া তাবাসসুম, নোয়াখালীর ফরিদা খানম সাকী, খাগড়াছড়ির বাসন্তী চাকমা, কক্সবাজারের কানিজ ফাতেমা আহমেদ, ফরিদপুরের রুশেমা বেগম, কুষ্টিয়ার সৈয়দা রাশিদা বেগম, মৌলভীবাজারের সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, রাজশাহীর আদিবা আনজুম মিতা, কুমিল্লার আরমা দত্ত, খুলনার শিরিনা নাহার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, শরীয়তপুরের পারভীন হক সিকদার, রাজবাড়ীর খাদেজা নুসরাত, ঢাকার শবনম জাহান শিলা, চট্টগ্রামের খাদিজাতুল আনোয়ার, নেত্রকোনার জাকিয়ার পারভীন খানম, মাদারীপুরের তাহমিনা বেগম, ঢাকার শিরীন আহমেদ ও জিন্নাতুল বাকিয়া।
বিকাল সাড়ে ৪টায় আ.লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলটির সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শুরু হয়। সভায় দলটির সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে মহিলা আসন বণ্টন করা হয়। প্রতি ৬টি আসনের বিপরীতে যে কোনো দল বা জোট ১টি সংরক্ষিত আসন পেয়ে থাকে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার ৫০টি সংরক্ষিত আসন বণ্টন করা হবে।
এদিকে ইসি সচিব গত রোববার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ৫০টি সংরক্ষিত আসনের মধ্যে এবার আ.লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি ৪টি, বিএনপি ১টি, অন্যান্য দল ১টি (ওয়ার্কার্স পার্টি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি সংরক্ষিত আসন পাবে।
তিনি বলেন, বিএনপির এমপিরা শপথ না নেয়ায় তাদের প্রাপ্য একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত থাকবে। বাকি ৪৯টি আসনে ৪ মার্চ ভোট হবে। আর বিএনপির এমপিরা শপথ নিলে ওই আসনে প্রার্থী দিতে পারবে।
তিনি জানান, এ নির্বাচনে অংশ নিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১২ ফেব্রুয়ারি ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আ.লীগ সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ১৫১০ জন। গত ১৫ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ফরম বিক্রি করে দলটি। এতে আ.লীগের আয় হয় ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
গণভবন সূত্রে জানা যায়, গত মাসের শেষ সপ্তাহে প্রার্থী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবেদনগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ৪১টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৪১ জনের তালিকা চূড়ান্ত করেন তিনি। আজ বাকি ২ জনের নাম প্রকাশ করা হতে পারে।
দশম জাতীয় সংসদে ৫০ জন সংরক্ষিত মহিলা এমপির মধ্যে আ.লীগের ৪২, জাতীয় পার্টির ৬ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন করে প্রতিনিধি ছিল।