পাবলিক ভয়েস: কয়েক বছরে সরকার ২৬ হাজারের বেশি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছে। ওই সব বিদ্যালয়ের প্রায় এক লাখ শিক্ষকের চাকরি সরকারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যালয়ের সঙ্গে জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের বেশিরভাগের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। অনেকের যথাযথ প্রশিক্ষণও নেই। এসব ঘাটতির কারণে জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ে মানসম্মত পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে জাতীয়কৃত বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের অর্ধেককে পুরনো সরকারি বিদ্যালয়ে বদলি করা হবে। ওই শূন্যপদে পুরনো বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্য থেকে বদলি করা হবে। সেই হিসাবে অন্তত অর্ধলাখ শিক্ষককে পুরনো সরকারি স্কুলে পাঠানো হবে। মার্চ মাসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এএফএম মনজুর কাদির গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) চতুর্থ দফায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এ শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে উপযুক্ত পাঠদান প্রয়োজন। কিন্তু জাতীয়কৃত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশের মান নিয়ে অনেকেরই উষ্মা আছে। এমন পরিস্থিতিতে এই বদলি প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে সরকারি আদেশ জারি করা হবে।
সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয়করণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের যে কোনো পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। কাছাকাছি বিদ্যালয়ে বদলির সিদ্ধান্ত এ পদক্ষেপকে আরো গ্রহণযোগ্য করবে। এতে ফলপ্রসূ সমন্বয় নিশ্চিত হবে। তবে এটি ঠিক যে, সব শিক্ষক অদক্ষ নন।
জানা গেছে, রেজিস্ট্রার্ড ২৬ হাজার ১৯৩ স্কুল তিন ধাপে জাতীয়করণ হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপের স্কুলের প্রায় সব শিক্ষক এক বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপের দুই হাজার ৭০ এবং তৃতীয় ধাপের ৪৬০ স্কুলের কেউ-ই এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণ পাননি। ওই সব স্কুলে ১০ সহস্রাধিক শিক্ষক আছেন।
শিক্ষক নেতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী এসব শিক্ষককেও প্রশিক্ষণের অধীনে নেয়ার দাবি তুলে বলেন, জাতীয়করণের পর বিশেষ উদ্যোগে নতুন সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। এর পর সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে গেছে।