আব্দুল্লাহ জোবায়ের প্রতিনিধি ময়মনসিংহ জেলা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ছেলের হাতে মারধরের পর হত্যার হুমকি পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ছাড়লেন মা-বাবা। মাদক সেবন ও কারবারিতে জড়িত ছেলের নির্যাতনে দিশেহারা মা-বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে অন্যের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন। পুলিশে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পাওয়ায় দিশেহারা বাবা মো. শাফি মিয়া (৫০) ও মা ঝরনা বেগম (৪২)।
থানায় দেয়া অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের উজানচরনওপাড়া গ্রামে ওই বাবা-মার বাড়ি। শাফি মিয়া একজন হত দরিদ্র কৃষক। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাদের সংসার। ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২৩) কোনও কাজকর্ম না করে বেশ কয়েক বছর ধরে নেশাগ্রস্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য বেচাকেনায় জড়িত হয়ে বড় কারবারি বনে যায়। পাশাপাশি জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে বাবার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চেয়ে না পেয়ে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। এ ঘটনায় অতিষ্ঠই হয়ে বেশ কয়েকবার টাকা দিলেও থেমে থেমে টাকা দাবি করে আসে। গত ১৮ ডিসেম্বর মা ঝরনা বেগমের কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে শাবল দিয়ে হামলা চালিয়ে মায়ের ডান হাত ও পা ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায় বাধা দিতে গেলে বাবা শাফি মিয়াকেও মারধর করে। পরে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এলে ফের মারধরের চেষ্টা চালিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর থেকে বাবা-মা বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকেই থানায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
বাবা শাফি মিয়া বলেন, আমার চোখের সামনে আমার স্ত্রীকে শাবল দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে মাদকাসক্ত ছেলে। বাধা দেওয়ায় আমার শরীরেও হাত তুলে। যা একজন বাবা হয়ে সহ্য করার মতো না। এখন টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এই জন্যই প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়েছি।
মা ঝরনা বলেন,আমার হাত ও পাও শাবল দিয়া আঘাত কইর্যা ভাইঙ্গ্যালছে। হাসপাতালে গিয়া বাড়িত আইলে হেইর্যা (আবার) টেহা চায়। না দিলে খুনের হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি রবিউল আযম জানান, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একজন উপ-পরিদর্শককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।