আকরাম হোসেন নান্দাইল উপজেলা প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের পূর্ব নদীরপাড় গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক নারী ও তাঁর পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুই নারী কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। উক্ত ঘটনায় সুফিয়া খাতুন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে নান্দাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার(১২অক্টোবর ২০২৫) রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে, সিংরইল পূর্ব নদীরপাড় গ্রামের মোছাঃ সুফিয়া খাতুন (৪২), স্বামী মোঃ আঃ রহমানের পরিবারের ওপর একই এলাকার প্রতিবেশী মোঃ কারিম মিয়া (৪৫), তাঁর ছেলে মোঃ সাগর মিয়া (২২), পলাশ মিয়া (২৭), মোছাঃ রেহেনা খাতুন (৫০), মোছাঃ মাজেদা খাতুন (২০) এবং মোছাঃ লিজা আক্তার (৪০)-এর নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে।অভিযোগে ভুক্তভোগী সুফিয়া খাতুন জানান, “আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আমার মায়ের পৈত্রিক জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও তারা কোনো সিদ্ধান্ত মানেনি। ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা রামদা, দা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে আমার ভাইয়ের স্ত্রী মোছাঃ তামান্না আক্তার (২৫)-এর বাড়িতে হামলা চালায় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এ সময় গালাগাল করতে নিষেধ করলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।”
অভিযোগ অনুযায়ী, হামলার সময় ৩নং আসামী পলাশ মিয়া লোহার রড দিয়ে তামান্না আক্তারের মাথায় আঘাত করতে গেলে তা হাতের আঙুলে লেগে হাড় ভেঙে যায়। এরপর ১নং আসামী কারিম মিয়া রামদা দিয়ে তাঁর মাথায় কোপ মারলে তিনি রক্তাক্ত জখম হন।তামান্না আক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে রক্ষা করতে সুফিয়া খাতুন, তাঁর মেয়ে মোছাঃ মিতু আক্তার (২৩) এবং তার মা মোছাঃ মাবিয়া খাতুন (৬২) এগিয়ে এলে আসামিরা তাদেরও এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।২নং আসামী সাগর মিয়া দা দিয়ে মিতু আক্তারের মাথায় কোপ মারলে তাঁর হাড় কেটে যায়। এ সময় মোছাঃ মাজেদা খাতুন বাঁশের লাঠি দিয়ে তাঁর কানের কাছে আঘাত করে। পরবর্তীতে অন্যান্য নারী আসামিরাও (রেহেনা, মাজেদা ও লিজা) সুফিয়া খাতুন ও তাঁর মাকে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখম করে।তখন আহতদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে। এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তামান্না আক্তার, মিতু আক্তার ও মাবিয়া খাতুনকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, ১৩ অক্টোবর বিকেলে সরজমিনে গেলে ভুক্তভোগী সুফিয়া খাতুন অভিযোগ করেন, “আসামিরা এখনো দা, রামদা হাতে নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে এবং আমাদের পরিবারকে খুন-জখমের হুমকি দিচ্ছে। আমরা ভয়ে আতঙ্কে আছি।” এসময় ঘটনার বিষয় জানতে অভিযুক্তদের খোঁজ করা হলে তাদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায় নাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জালাল উদ্দীন মাহমুদ জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”