আকরাম হোসেন ময়মনসিংহ উওর জেলা প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৯নং আচারগাঁও ইউনিয়নের হাওলাপাড়ায় পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এক নারীর মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, এ মামলায় নিরপরাধ এক ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে, যা এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাওলাপাড়া এলাকার বেবি আক্তার স্বপন মিয়ার স্ত্রী। তিনি পূর্বে নান্দাইল পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড নাথপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। স্বামী ও সন্তানসহ তাদের নানা অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী ২০২২ সালে তাদেরকে মারধর ও জরিমানা করে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে বেবি আক্তার তার স্বামী, সন্তান নিয়ে হাওলাপাড়ায় বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।কিন্তু এখানেও তাদের অপকর্মের কারণে দুই বছর আগে স্থানীয় সালিশ বৈঠকে বেবি আক্তারের পরিবারকে এলাকাবাসী ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে।সম্প্রতি, বিল্লাল মিয়ার সুপারি গাছ নিয়ে বিরোধের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা জানান, বেবি আক্তার ও তার ছেলে সেলিম জোরপূর্বক বিল্লালের গাছ থেকে সুপারি নিতে গেলে, বিল্লালের স্ত্রী হালিমা খাতুন বাধা দিলে তারা হালিমাকে মারধর করে।ঘটনার পরদিন ১ অক্টোবর ২০২৫ ইং তারিখে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে প্রায় ৬০-৭০ জন গন্যমান্য ব্যক্তির অংশগ্রহণে একটি সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে বেবি আক্তার ও তার ছেলে সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বৈঠকে তাদের ক্ষমা চাইতে বলা হলে, বেবি আক্তার অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। তখন উপস্থিত লোকজন প্রতিবাদ করিলে সেলিম ঘর থেকে দা নিয়ে দৌড়ে আসার সময় ভেঁজা উঠানে পা পিছলে পড়ে যায়।এ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে ৫ অক্টোবর ২০২৫ ইং তারিখে বেবি আক্তার ৬ জনের নামে নান্দাইল মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নিরপরাধ বিল্লাল মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। পরদিন ৬ অক্টোবর ২০২৫ ইং বেবি আক্তার ১০ জনের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞ আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের করে। সরজমিনে গেলে উপস্থিত দরবারি গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ — নিজাম উদ্দীন, আলাল উদ্দিন, রহমত আলী, আনারুল হক, বেলায়েত হোসেন, আরমান মিয়া, ইয়াসিন, আনজু মিয়া, হাসেম আলী, সেলিম মিয়া, সোহরাব মেম্বার, বরজু মেম্বার, মাওলানা আবুল খায়ের, হেলাল উদ্দিনসহ আরও অনেকে সাংবাদিকদের বলেন, “বেবি আক্তার ও তার ছেলে সেলিমের আচরণে পুরো এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। সালিশে তাদের দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরেও তারা উল্টো মিথ্যা মামলা করে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করছে।”তারা আরও বলেন, গত ১ অক্টোবরের কথিত হামলা ও মারধরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। এ ঘটনায় কোনো মারধর, শ্লীলতাহানি কিংবা চুরি সংঘটিত হয়নি। এমনকি আসামিরা তারা কেউই দাঙ্গাবাজ, উশৃঙ্খল বা ভূমিদস্যু প্রকৃতির নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে তাদের সম্মানহানি করার জন্যই বেবি আক্তার এমন মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছেন।বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সেলিম মিয়ার ডান হাতের হাড় ভাঙা। বাস্তবে দেখা যায়, সে তার বাম হাতে বেল্ট বেঁধে রেখেছে। এ বিষয়ে আহত সেলিম মিয়াকে প্রশ্ন করা হলে, সে কোথায় চিকিৎসা নিয়েছে তা সঠিকভাবে বলতে পারেনি।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু ও বিস্তারিতভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় জনগণ ও অভিযুক্তরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন এবং মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।