আকরাম হোসেন নান্দাইল উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে “নান্দাইলে খুনের ঘটনায় ১১ পরিবারের বাড়ি ভাংচুর, কোটি টাকার ক্ষতি” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের কিছু ফুটেজ নিহত আক্তার হোসেনের পরিবারের সদস্যদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তরা প্রকাশিত সংবাদের তিব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। উক্ত সংবাদে নিহত আক্তার হোসেনের পরিবারের বিরুদ্ধে লুটপাট ও ভাঙচুরের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে তারা উল্লেখ করেন।
নিহত আক্তার হোসেনের ভাই সোহেল মিয়া বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই—আমাদের পরিবার কোনোভাবেই লুটপাট বা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত নয়। বরং জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীভাবে সংঘর্ষ ঘটিয়ে আমাদের প্রিয় পরিবারের সদস্য আক্তার হোসেনকে নির্মমভাবে খুন করেছে।হত্যাকাণ্ডের পর আমাদের পরিবার ভয়-আতঙ্কে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা এখনও শোকাহত, এমন পরিস্থিতিতে লুটপাট করার প্রশ্নই ওঠে না।তিনি আরও বলেন, আমরা এখনো আহতদের চিকিৎসা কাজ নিয়ে বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে অবস্থান করি।প্রতিপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যাতে মূল হত্যার বিষয়টি আড়ালে যায় এবং হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে দুর্বল করা যায়।
প্রকৃত ঘটনা হলো—নিহত আক্তার হোসেনের পরিবার (আমরা) ন্যায়বিচারের আশায় মামলা করেছি। অথচ প্রতিপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা প্রচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। সোহেল মিয়া জানান, আসামি রতন মিয়ার শশুর বাড়িতে কয়েকটি গরুর খোঁজ পওয়া গেছে। যা নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে জানানোর পর তিনি ফোর্স পাঠিয়ে সেখানে গরু পাওয়ার পর সেগুলো তাদের জিম্মায় দিয়ে এসেছে।
সংবাদে উল্লেখিত লুটপাটের সঙ্গে আক্তার হোসেনের পরিবার বা আমরা জড়িত বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ করা হোক। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।
আমরা সংবাদকর্মীদের অনুরোধ করছি—
সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রকাশ করুন। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে যেন একটি নিহত ব্যক্তির পরিবারকে অসম্মানিত না করা হয়।
হত্যার ন্যায়বিচার ও প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সহযোগিতা করুন।শেষে আবারও বলছি, নিহত আক্তার হোসেনের পরিবার বা আমরা লুটপাট বা ভাঙচুরের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। আমরা শুধুমাত্র বিচার চাই, মিথ্যা অপপ্রচার নয়। উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর জসিম উদ্দিন ও আ. হেলিমের সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্ধের জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষে আক্তার হোসেন (৪৫) এক ব্যক্তি নিহত হয়। এঘটনায় নিহতের পরিবারের মহিলা সহ আরো ৫ জন গুরুতর ভাবে আহত হয়। এঘটনায় আক্তার হোসেনের পুত্র সালমান শাহ্ বাদী হয়ে নান্দাইল মডেল থানায় ২৯ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলার ৪ আসামি গ্রেপ্তারও হয়েছে । সরজমিনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, লুটপাটের সঙ্গে এলাকাবাসী বা আক্তার হোসেনের পরিবারের কেউ জড়িত না। ঘটনার পর আসামিরা গা ডাকা দিলে তাদের আত্বীয় স্বজনরা এসে এগুলো নিয়ে গেছে। যার দোষ চাপানো হচ্ছে নিহতের পরিবারে ও এলাকাবাসীর উপর। নিহত আক্তার হোসেনের মা- হাজেরা বেগম (৭০) বিলাপ করে (কেঁদে) বলেন ওরা আমার ছেলেটাকে কুপাইয়া ও লাঠি দিয়া বাইড়াইয়া মাইরা ফালাইছে। এখন আবার বাকি ছেলেদের উপর জিনিসপত্র লুট করার দোষ দিতাছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার দেইখা যাইতে চাই।