আশরাফ আলী ফারুকী 

ময়মনসিংহে বিএনপির উদীয়মান নেতা ও সাবেক পাগলা থানা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক চমক ফকিরকে ঘিরে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত অপপ্রচারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দক্ষিণ ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। একে শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র নয়, বরং দলের ভেতরের সুবিধাভোগী মহলের অপচেষ্টা বলেও উল্লেখ করছেন তারা।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ছবিতে দেখা যায়, পাগলা থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম চমক ফকির বিএনপিরই আরেক নেতা আলমগীর মাহমুদ আলমের বাসায় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু সেই ছবি বিকৃত করে তা আওয়ামী লীগ নেতা মিলন ফকিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়। এই ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

দক্ষিণ ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “বিএনপি নেতা চমক ফকিরের সঙ্গে আমার বাসায় মধ্যাহ্নভোজের একটি ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বিকৃত করে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন ফকিরের নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে—এটা আমাকে বিস্মিত করেছে। এটি যে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত অপপ্রচার, তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।”

তিনি বলেন, “আমরা বিগত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়েছি। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে আছি। সেই প্রেক্ষাপটে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো একধরনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এতে আমি বা চমক ফকির কেউই বিচলিত নই।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের এখন একমাত্র লক্ষ্য তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। দলকে শক্তিশালী করে জনগণের ভরসার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের মানুষের আস্থা অর্জনের। এই সময়ের মধ্যে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, তারাও মূলত ফ্যাসিবাদের স্বপক্ষেই খেলছেন।”

আলমগীর মাহমুদ আলম এই অপপ্রচারের পেছনে দলীয় ভেতরের কিছু সুবিধাবাদী চক্রের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “ফ্যাসিবাদের পক্ষের কিছু মুখোশধারী ভেতরের লোকও এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত। তারা দলের প্রকৃত কর্মীদের টার্গেট করে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে চায়। এসব এখন আর গোপন কিছু নয়।”

তিনি আহ্বান জানান, “জনগণের শক্তির ওপর আস্থা রাখুন। আমরা ইতিবাচক রাজনীতি ও জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করছি। যাতে ফ্যাসিস্টরা আর কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সে ব্যবস্থা আমাদের সবাইকে একসঙ্গে করতে হবে।”

চমক ফকিরকে ঘিরে এই অপপ্রচার যে একক কোনো ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র—এ বিষয়ে দলীয় নেতাদের অবস্থান এখন পরিষ্কার। তারা এটিকে নেতিবাচকভাবে না নিয়ে বরং জনগণের মাঝে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিয়ে জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করছেন। দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, সত্য ও গণতন্ত্রের শক্তি দিয়েই অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হবে।