নুর আহমেদ সিদ্দিকী 

ভারতে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন ও দেশে বিদেশি সংস্কৃতি চাপানোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, শায়খে চরমোনাই, বলেছেন, সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ গুন্ডামি মার্কা নির্বাচন আর সহ্য করবে না। তিনি শিগগিরই ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন।

আজ শনিবার বিকাল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ আয়োজনে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিশাল গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই সমাবেশ ভারতে ওয়াকফ আইন সংশোধনের মাধ্যমে মুসলিম নির্মূলের চক্রান্তের প্রতিবাদ এবং দেশে ইসলাম ও ধর্মবিদ্বেষী নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত হয়।

ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রসঙ্গে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘ভারতে মুসলিমদের জায়গা-জমি, মসজিদ, মাদরাসা এমনকি কবরস্থানের জমিও দখল করে নেয়া হচ্ছে। মোদী সরকার মুসলিমদের নির্মূলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মুসলমানরা ইতিহাস ভোলে না। মুসলমানরা জাগ্রত হলে মোদী সরকারের মসনদও থাকবে না।’’

তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘ ও ওআইসিকে ভারতের মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুসের উদ্দেশে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘নাস্তিকদের পদায়ন করে আপনি সুখে থাকতে পারবেন না। সতী মা-বোনদের আইন এরা করবে কেন? নারী কমিশন পতিতাদের শ্রমিক ঘোষণা করার প্রস্তাব দেয়ার সাহস পায় কীভাবে? কমিশন বাতিল করলেই হবে না, সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ব্যর্থ হলে আপনার উন্নয়নের ওপরও জনগণ থুথু নিক্ষেপ করবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, "বিদেশি কোনো সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবেন না। জনগণ এই দেশের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। সংস্কারের আগে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আগে সংস্কার; পরে নির্বাচন।"

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসির সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। একক কোনো দলকে সরকার বিশেষ সুবিধা দিলে জনগণ তা বরদাশত করবে না। হাজারো শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করলে পরিণতি শুভ হবে না।"

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম। বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, শায়খুল হাদিস আল্লামা মকবুল হোসাইন, মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, এডভোকেট হানিফ মিয়া, মুনতাসির আহমাদ, ইঞ্জিনিয়ার মোরাদ হোসেন, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, শাহাদাত হোসাইন প্রধানিয়া, হাম্মাদ বিন মোশাররফ, মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক ও আরিয়ান মুহাম্মদ ইমন প্রমুখ।