গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, আজকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলো এই সংগঠনটি। গত ৭ বছরে ফ্যাসিবাদের লড়াই জারি রেখেছিলো। এই ছাত্র সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী হামলা, মামলা, জেল জুলুমের শিকার হয়েছে। সব শেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব থাকা অধিকাংশ তরুণ এই ছাত্র অধিকার পরিষদের বর্তমান নেতা কিংবা সাবেক নেতা ছিলো। ২০১৮ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদের জন্ম না হলে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান হতো না। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি রচনা করার জন্য বিগত সময় কাজ করেছে এই ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু হানিফ এসব কথা বলেন। জেলা শহরের মুক্তমঞ্চে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আবু হানিফ বলেন, এই সরকারের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি করতে পারেনি। অনেক দেরিতে হলেও যৌথ বাহিনী অপারেশন 'ডেভিল হান্ট' শুরু করেছে। অপারেশন 'ডেভিল হান্ট'কে বিতর্কিত করার জন্য একটি গোষ্ঠী তাদের পারিবারিক বা রাজনৈতিক আক্রোশকে ব্যবহার করে অনেক নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে ও বাণিজ্য শুরু করেছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। আমরা শুনেছি, এই বাণিজ্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে এমনকি কিশোরগঞ্জেও হচ্ছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও কোন রাঘববোয়ালদের আটক হয়নি, যাদের আটক করেছে সবাই চুনোপুঁটি। এই অপারেশনের গতি আরও বাড়াতে হবে। যেসব রাঘববোয়ালরা অবৈধ অর্থ খরচ করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, তাদের শিকার করতে হবে। তা না হলে এই ডেভিল হান্ট অপারেশন সফলতার মুখ দেখবে না।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদন গণহত্যার বিচারে সহযোগিতা করবে। কিন্তু ৬ মাস হয়ে গেলেও এখনও বিচারের তেমন অগ্রগতি নেই। ইতোমধ্যে অনেকেই নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করেছে। জুলাই গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার আগে কোন নির্বাচন জনগণ মেনে নিবে না। তাই গণহত্যার বিচারের বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
আবু হানিফ বলেন, জুলাই আন্দোলনের ৬ মাস পার হয়েছে। এখনই আন্দোলনের ক্রেডিট নিয়ে নিজেদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তির যেকোন বিভাজনের ফলে পরাজিত শক্তি সুযোগ নিতে পারে। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সেই পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিতে পারি। দেশের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সমাবেশ শেষে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ৫দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়।
কর্মসূচিতে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা ইমন খান, মারুফ আহমেদ হৃদয়, পায়েল চৌধুরী, রিপন রাজ, ফয়সাল, ইমরান, জেলার সাবেক ছাত্র নেতা অভি চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম প্রমুখসহ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।