জাভেদ রায়হান, কুবি প্রতিনিধি: প্রথম আলো পত্রিকার জৈষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে দীর্ঘ সময় ধরে আটক রাখা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে গ্রেপ্তারের দাবিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব। এর পাশাপাশি হেনস্তাকারীদের আইনের আওতায় আনা ও রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সংগঠনটির সভাপতি মাহফুজ কিশোর এবং সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান নোবেল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে এই নিন্দা প্রকাশ করেন।
উক্ত বিবৃতিতে তারা বলেন “দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলাম বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার একজন নক্ষত্র। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশে দৃঢ়তার সাথে অনুসরণীয় সাংবাদিকতা করে আসছেন। গতকাল সচিবালয়ে রোজিনা ইসলামের সাথে যে অনভিপ্রেত আচরণ করা হয়েছে তা সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা কর্তৃক গণমাধ্যমকর্মীর প্রতি আচরণের কোনো শোভন দৃষ্টান্ত হতে পারে না।
আমরা মনে করি তাঁকে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে তাঁর সাথে অন্যায় করা হয়েছে। তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতনের যেসব অভিযোগ ও নজির সামনে এসেছে সেগুলো বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের আরেকটি কালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
রোজিনা ইসলামকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করার পর তাঁর নামে মামলা দেয়ার পেছনে আমরা হিংসার প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি। আমরা মনে করি সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে তাঁর করা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের প্রতি ক্রোধান্বিত হয়ে তাঁর প্রতি এহেন আচরণ করা হয়েছে।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, রোজিনা ইসলামের প্রতি এই আচরণ সাংবাদিকতার গলা চেপে ধরার একটি নজির ও মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতি বাধা। আমরা অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নামে করা এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তাকে হেনস্তাকারী ও এই ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় নথি চুরি এবং অনুমতি ছাড়া সেই নথির ছবি তোলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয় এবং এর জের ধরে স্বাস্থ্য সচিবের পিএস মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে প্রায় পাঁচ ঘন্টা আটক করে রাখা হয়। আটক রাখাকালীন সময়কার তার উপর নানা ধরণের নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে রাত ৮ টায় সচিবালয় থেকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এন.এইচ/