আওয়ামী লীগের সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০১৩ সালের মে মাসে ঢাকা অবরোধ এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান করে হেফাজতে ইসলাম। সরকার ওই সময় তাদের কঠোরভাবে দমন করে।
নাম প্রকাশ না করে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা গতকাল সোমবার একটি জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, তখন কঠোর ব্যবস্থা নিলে হেফাজত আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারত না। এ জন্য নীতিনির্ধারকরা নিজেদের ভুল শোধরাতে চান। এবার তাদের লক্ষ্য হেফাজতে ইসলামের মাজা ভেঙে দেওয়া।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল এক ভার্চুয়াল মতবিনিময়সভায় বলেন, হেফাজতে ইসলাম তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করেছে। তবে শুধু কমিটি বিলুপ্ত করলেই হবে না, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রাজনীতিও বিলুপ্ত করতে হবে।
তিনি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের রাজনৈতিক সহিংসতার তাণ্ডব কি বন্ধ হবে? শেরেবাংলানগরে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে তিনি কুমিল্লা সড়ক জোন, বিআরটিসি ও বিআরটি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় যুক্ত হন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজত নামধারী সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীদের আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বিনাশ করার এখনই সময়। তা না হলে এই দানবীয় শক্তি দেশের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র নষ্ট করে দেবে।
নানক বলেন, দেশ ও জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলার প্রয়োজনে কখনো কখনো ছাড় দিতে হয়েছে। ২০১৩ সালের তাণ্ডবের পর মনে করা হয়েছিল তারা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম সারা দেশে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, হেফাজতে ইসলাম নামধারী সাম্প্রদায়িক এই গোষ্ঠী বিএনপি-জামায়াতের প্ররোচনায় দেশকে আবার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তৈরি করা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতার মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে এবং নাশকতার সৃষ্টি করেছে। এ কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কঠোর হাতে দমন করছে।
হানিফ বলেন, এটা ঠিক নয়। দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তাই সরকার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ সব সময় স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সে কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।